কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে প্লাবিত হয়েছে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি। ফলে বিপাকে পড়েছেন তিস্তা পাড়ের হাজার হাজার মানুষ।
এদিকে পানি নিয়ন্ত্রণের ব্যারাজে ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার সকালে তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার ২৯ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫-৭ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি নেমে যেতে না যেতেই ফের বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তিস্তার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের মানুষ।
তিস্তার পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফের পানিবন্দি হতে শুরু করেছে এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী পরিবারগুলো। এসব অঞ্চলে বিগত বন্যায় শুরু হওয়া ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলছে বলে দাবি করেছে জেলা প্রশাসন।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকদিন থেকে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যে রয়েছে। গত রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও গত সোমবার সকাল ৬টা থেকে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে।
পানি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে অথবা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুত আছে বলে জানান নূরুল ইসলাম।
লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোছদ্দেক চৌধুরী বলেন, ‘চরাঞ্চলে পানি বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দিদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে কাজ চলছে। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যা জানান, পানিবন্দিদের নৌকায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে কাজ করা হচ্ছে। তাদের জন্য ত্রাণসামগ্রীর ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
টিএইচ